মিতু হত্যা মামলা! দায় কার? - THE WATCHDOG POST

২০১৬ সালের আলোচিত ও সমালোচিত হত্যাকান্ডের একটি মিতু হত্যা। নানান নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে চলা এই ঘটনার মোড় ঘুরছে বারবার।স্বয়ং গ্রেফতার হয়েছেন মিতুর স্বামী

 


২০১৬ সালের আলোচিত ও সমালোচিত হত্যাকান্ডের একটি মিতু হত্যা। নানান নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে চলা এই ঘটনার মোড় ঘুরছে বারবার।স্বয়ং গ্রেফতার হয়েছেন মিতুর স্বামী সাবেক উপকমিশনার বাবুল আক্তারও! তবে তাঁকে নির্দোষ দাবী করে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ইউটিউবে এক ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি তাঁর নির্দোষিতা প্রমাণে চেষ্টা করেন। তবে ইলিয়াস হোসেনের বক্তব্যকে বিরোধিতা করেছেন চট্টগ্রামের মানবাধিকার আইনজীবি ও লেখক আহমেদ আফগানি। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার দেওয়া সম্পূর্ণ বার্তা নিম্নে সংকলিত করা হলো।

❝ বাবুল আক্তার তার শত্রুদের চিনে। বাবুল জঙ্গীদের বিরুদ্ধে এমন কোনো ব্যবস্থা নেয় নাই যে, জঙ্গীরা তার বউকে কুপিয়ে হত্যা করবে। বাবুল চট্টগ্রাম শিবিরের সাথেও এমন দ্বন্দ্বে জড়ায় নাই, যে দ্বন্দ্বের কারণে শিবির তার তার স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করবে।
বাবুলের স্ত্রীকে যদি বনজেরাই হত্যা করবে তবে বাবুলের ভূমিকা কী? কেন সে তার হত্যাকাণ্ডের জন্য জঙ্গী ও ছাত্রশিবিরকে দায়ি করেছে? কেন দুইজনকে ক্রসফায়ার দিয়েছে? তার মন্তব্যের জেরে শিবির ও শিবির সমর্থিত ৪০ জনের মতো গ্রেপ্তার হয়েছে। এটা কেন? সারা বাংলাদেশ তখন তাকে সিমপ্যাথি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। কেন সে বনজকে তখন বাঁচিয়ে দিয়েছে? কীসের আশায়?
সবচেয়ে বড় কথা ও গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো কেন সে পুলিশের চাকুরি থেকে পদত্যগ করলো বা পদত্যাগ করতে বাধ্য হলো? কেন এই নিয়ে সে জাতির সামনে আসলো না। সরকারের জন্য কাজ করতে গিয়ে সে তার স্ত্রী হারিয়েছে। তার তো প্রমোশন হবার কথা! কেন ও কার চাপে সে পদত্যগপত্র জমা দিল?
পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে সে কেন অসন্তুষ্ট ছিল না? সে কেন সংবাদ সম্মেলন করে বলে নি, আমার স্ত্রীকে বনজেরা খুন করেছে। আমাকে পুলিশ থেকে চাকুরিচ্যুত করেছে। সাবেক সাংবাদিক ইলিয়াসের প্রতিবেদনে এই বিষয়টা আসেনি।
মূলত মিতু হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতা পুলিশ হেডকোয়ার্টার আগেই টের পেয়েছে। ৫ জুন ২০১৬ তারিখে মিতু খুন হয়েছে। ২৪ জুন রাতে ডিবি অফিসে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৫ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আসে।
এর দ্বারা বুঝা যায়, তার খুনের সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় ডিবি। সে তার নেটওয়ার্ক ব্যবহার নিজেকে খুনের দায় থেকে অব্যাহতি নেয়। বিনিময়ে চাকুরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। আর এক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করে তৎকালীন আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক।
এর মানে এই না যে, বনজ ভালো মানুষ। বনজ চোরাচালানের সাথে যুক্ত ও বাবুল আক্তারের শত্রু। এগুলো সব ঠিক। কিন্তু মিতু খুনের দায় বাবুলেরই। তার আচরণ থেকে এটা আমার ধারণা। সে খুনের মোটিভ পরিবর্তন করেছে। জঙ্গী ও শিবিরের ওপর দায় চাপিয়েছে।
আর যে কারণে খুন অর্থাৎ পরকীয়া। এটা বাবুলের জন্য নতুন নয়। একজন দক্ষ অফিসারের অন্ধকার সাইড থাকে। এটা বাবুলের অন্ধকার সাইড। বাবুল ইন্ডিয়ার এক মহিলা এনজিও কর্মকর্তার সাথে সমস্যা করেছে। তার আগে ঝিনাইদহে তার অধীনস্থ এস আই আকরামের স্ত্রীর সাথেও তার লাইন ছিল। এবং এই পরকীয়ার জেরে সে এস আই আকরামকে খুন করে বলে অভিযোগ আছে।
বাবুলের ক্ষমতার দৌরাত্মে সেই খুনও গতি হারিয়েছে। আকরামের পরিবার মামলা করতে পারেনি। আকরামের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বলে রেকর্ড হয়েছে।
ভিন্ন কথা বলে রাখলাম। ইলিয়াসের রিপোর্ট দেখে বাবুলকে দায়মুক্তি দিয়ে দেবেন না। বনজরা যেমন সাঙ্ঘাতিক, বাবুলও কম নয়! ❞

- আহমেদ আফগানি
মানবাধিকার আইনজীবি ও লেখক, চট্টগ্রাম।


© Ahmed Afghani ফেসবুক আইডি হতে সংকলিত।

Post a Comment